নিয়মিত থাকছে চট্টগ্রামের বাড়িতে, আসা-যাওয়ার করছে চকরিয়ায়

বার্তা পরিবেশক:
আওয়ামী দুঃশাসনের ১৫ বছরে চকরিয়া-পেকুয়ায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করা দুর্ধর্ষ আওয়ামী ক্যাডার সাবেক সংসদ সদস্য জাফর আলমের প্রধান সহযোগি চকরিয়ার মাতামুহুরি সাংগঠনিক উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পশ্চিম বড়ভেওলা ইউনিয়নের বরখাস্ত চেয়ারম্যান, ২৪’র জুলাই গণ-আন্দোলনে হামলাকারী সিরাজুল ইসলাম বাবলা আগামী নির্বাচন কেন্দ্রিক নাশকতা সংঘটিত করতে আমেরিকা থেকে দেশে ফিরে এসেছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। এর আগে ২৪’র গণ-অভ্যূত্থানের পর আমেরিকা পালিয়ে গিয়েছিলেন তিনি।
খবর নিয়ে জানা গেছে, সম্প্রতি অতিগোপনে দেশে ফিরেছেন তিনি এবং গত দুই মাস চট্টগ্রামের বাসায় (এপিক ক্রাউন রিজ
এ৩, ৩য় তলা, ২ নম্বর রোড
নাসিরাবাদ প্রপার্টি) অবস্থান করার পর কয়েকদিন ধরে গোপনে চকরিয়ার ইলিশিয়ার নিজ বাড়িতে আসা-যাওয়া করছেন। সর্বশেষ গত ২৮ নভেম্বর ভোরে স্ত্রীকে সাথে ইলিশিয়ার বাড়িতে এসেছেন। স্থানীয় লোকজন এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীসহ স্থানীয় সাধারণ লোকজন জানিয়েছেন, গণ-অভ্যুত্থানের পর ২০২৪ সালের ৩ নভেম্বর চকরিয়া প্রধান সড়ক বিভিন্ন যানবাহন ভাংচুর ও জ¦ালাও-পোড়াও’র ঘটনায় দায়ের করা মামলার এজাহারভুক্ত আসামী বাবলা। আগামী নির্বাচন কেন্দ্রিক আওয়ামী লীগের পূর্বঘোষিত নাশকতার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতেই পলাতক আওয়ামী লীগ নেতা বাবলা দেশে এসেছেন।
আশঙ্কা করা হচ্ছে, তিনি চকরিয়া-পেকুয়ায় ব্যাপক নাশকতায় নেতৃত্ব দিতে পারেন। মূলত বিএনপির অন্যতম শীর্ষ নেতা সালাহউদ্দীন আহমদকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়তে কারান্তরীণ সাবেক এমপি জাফর আলমের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করবেন এই সিরাজুল ইসলাম বাবলা। ইতোমধ্যে পলাতকসহ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা আওয়ামী লীগ ও অন্যান্য অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের সংঘটিত করতে উদ্যোগ নিয়েছে বাবলাসহ চকরিয়া-পেকুয়ার শীর্ষ আওয়ামী লীগ নেতারা-এমন খবর এখন মানুষের মুখে মুখে।
জাফর আলমের ডানহাত খ্যাত এই বাবলা আওয়ামী ক্ষমতা হাতে পেয়ে ধরাকে সরাজ্ঞান করেছিলেন। বিএনপি-জামায়াতের লোকজনের বিরুদ্ধে মামলা-হামলাসহ নানা অত্যাচার, চিংড়ি ঘের দখল, জমি দখল, সরকারি প্রকল্প হরিলুট, সন্ত্রাসী ও ডাকাত লালন, সাধারণ লোকজনকে নির্যাতনসহ নানা অপরাধে ডুবে ছিলেন। জাফর আলমের ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে পুরো মাতামুহুরী এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিলেন। নিজস্ব বাহিনী তৈরি করে করতেন সব অপরাধ। ভয়ে কেউ বাবলা ও তার লোকজনের বিরুদ্ধে মুখতে পারেনি তখন।
স্থানীয় লোকজন অভিযোগ করেছেন, সিরাজুল ইসলাম বাবলা এলাকায় ফিরে বাড়িতে অবস্থান করলেও পুলিশ তাকে গ্রেফতার করছে না। অভিযোগ রয়েছে, মাতামুহুরী সাংগঠনিক উপজেলা বিএনপির কয়েকজন শীর্ষ বিএনপি নেতা বাবলাকে প্রশ্রয় দিচ্ছে। মোটা অংকের উৎকোচ দিয়ে ওইসব বিএনপি নেতাদের ম্যানেজ করে এলাকায় অবস্থান করার চেষ্টা করছে বাবলা। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন, নির্যাতিত বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মী ও সাধারণ লোকজন।
স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীরা বলেন, সিরাজুল ইসলাম বাবলা সাবেক দুর্ধর্ষ সংসদ সদস্য জাফর আলমের প্রধান সহযোগি। জাফর আলমের সব অপকর্মের সাথে বাবলা জড়িত। এছাড়া জাফর আলমের প্রভাবে পুরো মাতামুহুরি এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিলেন বাবলা। তৎসময়ে এমন কোনো অপরাধ নেই, যা তিনি করেননি। গণ-অভ্যূত্থানের পর পালিয়ে আমেরিকা চলে গিয়েছিলো। কিন্তু জাফর আলম কারাগারে থাকায় তার হয়ে আগামী জাতীয় নির্বাচন ঘিরে চকরিয়া-পেকুয়ায় নাশকতা ঘটাতে এলাকায় ফিরেছেন বাবলা। জাফরের পুত্র তুহিনের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে তার। বাবলার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের লোকজন সংঘটিত হয়ে চকরিয়া-পেকুয়ায় ব্যাপক নাশকতার ঘটাতে পারে। তাই দ্রুত সময়ে বাবলাকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার জন্য পুলিশ ও অন্যান্য আইন-শৃঙ্খবাহিনীর প্রতি আমরা জোর দাবি জানাচ্ছি।’
একই সাথে যেসব বিএনপি নেতারা বাবলাকে প্রশ্রয় দিচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দীন আহমদসহ দলের হাইকমান্ডের প্রতি আহ্বান জানান সাধারণ নেতাকর্মীরা।